সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জমি নিয়ে বিরোধে দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আরোও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। রোববার সকালে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের রণভূমি গ্রাম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল । সকাল দশটা থেকে রামদা, টেটা, চাইনিজ কুড়ালসহ নানা জাতের দেশীয় অস্ত্রসহ মুখোমুখি অবস্থান নেয় গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান চৌধুরী ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালামের লোকজন এবং একই গ্রামের প্রভাবশালী আশিক মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা শফিক চৌধুরীর লোকজন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। কিছুক্ষণ সংঘর্ষ চলার পর শোনা যায় গুলির আওয়াজ। পাইপগান হাতেও দেখা যায় কয়েকজনকে। এসময় গুলিবিদ্ধ হন আশিক মিয়ার পক্ষের অন্তত ১৮ জন। এছাড়াও ইটপাটকেল, লাঠিসোটার আঘাতে উভয়পক্ষের আরও ১০—১২ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধরা হলেন— মাদ্রাসা ছাত্র মুন্না (১৫) ও বিজয় ইসলাম (১৪), আমিরুল (২৪), মোজ্জাকির (৪২), তুফায়েল মিয়া (৩৮), মরম মিয়া (৬০), ছাতির মিয়া (৬৫), মাসুম আহমেদ (২০), জাহিদ আলম (২৬), জয় ইসলাম (২০), শাকিবুল (১২), পাবেল মিয়া (৪২), শাহরুখ খান (২১), মো. মোজাহিদ (২৩) শাহ আলম মিয়া (৭০), বারেক চৌধুরী রুবেল (৪০), টিপু মিয়া (২৬) ও আব্দুস সাত্তার (৫০)। গুলিবিদ্ধ সহ গুরুতর আহতদের দিরাই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। দিরাই হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার পিন্টু দাস জানান, আহতদের শরীরে গুলির চিহৃ পাওয়া গেছে, এক্সরে করার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, লুৎফুর ও আশিক মিয়ার মধ্যে গ্রামের স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। একে ওপরের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে কয়েকটি। গ্রামের একটি জায়গায় স্কুল বানানোর জন্য জমি ক্রয় করেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাশিদুল ইসলাম। এই জায়গার দখল নিতে গেলে বাধা দেন লুৎফুর রহমানের লোকজন। দুই দিন আগে আশিক মিয়ার ভাই মনসুর মিয়ার ওপর লুৎফুর রহমানের লোকজন দিরাই বাজারে হামলা করে। এর জের ধরে রোববার সকালে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। দিরাই থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দুই পক্ষেও মধ্যে পূর্ব থেকে বিরোধ ছিল। থানায় মামলাও আছে দুই পক্ষের লোকজনের। দুইদিন আগে সরকারি খাস জায়গার পাশে ব্যক্তিগত জায়গা বিক্রয় নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এর জের ধরে রোববার সংঘর্ষে জড়ান তারা। সংঘর্ষের পর পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে গেছে। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :